Blogroll

সকল প্রকার নাত, ইসলামী কিতাব, ইসলামী ভিডিও, ইসলামের ইতিহাস, শরিয়তের মাসআলা এবং ইসলামী বিভিন্ন জ্ঞানসহ আরো অনেক কিছু...

Hadith

ইবাদতের দরজা
           রোযা গোপন ইবাদত, কেননা আমরা প্রকাশ না করলে কেউ এ কথা জানতে পারে না যে, আমরা রোযা রেখেছি কিনা। আল্লাহ গোপন ইবাদতকে বেশি পছন্দ করেন। একটি হাদীস শরীফ অনুসারে, “রোযাকে ইবাদতের দরজা বলা হয়েছে।” (আল জামেউস সগীর, ১৪৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-২৪১৫)

স্বর্ণের দরজা বিশিষ্ট পরিবেশ
           হযরত সায়্যিদুনা আবূ সাঈদ খুদরী رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ থেকে বর্ণিত, মক্কী মাদানী সুলতান, রহমতে আলামিয়ান হুযুর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যখন রমযান মাসের প্রথম রাত আসে, তখন আসমান ও জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। আর সেগুলো সর্বশেষ রাত পর্যন্ত বন্ধ করা হয় না। যে কোন বান্দা এ বরকতময় মাসের যে কোন রাতে নামায পড়ে, তবে আল্লাহ্ তাআলা তার প্রতিটি সিজদার পরিবর্তে (অর্থাৎ বিনিময় স্বরূপ) তার জন্য পনের শত নেকী লিপিবদ্ধ করেন। আর তার জন্য জান্নাতে লাল পদ্মরাগ পাথরের মহল তৈরী করেন, যার ষাট হাজার দরজা থাকবে, প্রতিটি দরজার কপাট স্বর্ণের তৈরী হবে, যাতে লাল বর্ণের পদ্মরাগের পাথর খচিত থাকবে। সুতরাং যে কেউ রমযানের প্রথম রোযা রাখে তার জন্য আল্লাহ্ তাআলা রমযানের শেষ দিন পর্যন্ত গুনাহ মাফ করে দেন এবং তার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকেন। রাত ও দিনে যখনই সে সিজদা করে তার ওই প্রতিটি সিজদার বিনিময়ে তাকে (জান্নাতে) একেকটা এমন গাছ দান করা হবে, সেটার ছায়া অতিক্রম করতে ঘোড়ার আরোহীকে পাঁচশ’ বছর দৌঁড়াতে হবে।” (শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩১৪ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৬৩৫)

পাঁচটি বিশেষ দয়া
           হযরত সায়্যিদুনা জাবির ইবনে আবদুল্লাহ رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ থেকে বর্ণিত: ছরকারে নামদার, মদীনার তাজদার, রহমতের ভান্ডার, রাসুলদের সরদার صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “আমার উম্মতকে রমযান মাসে পাঁচটি এমন বিষয় দান করা হয়েছে, যেগুলো আমার পূর্বে অন্য কোন নবী عَلٰی نَبِیِّنَا وَعَلَیۡہِ الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام পায়নি ”
১/ যখন রমযানুল মোবারকের প্রথম রাত আসে, তখন আল্লাহ্ তাআলা তাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন। আর যার প্রতি আল্লাহ রহমতের দৃষ্টি দেন তাকে কখনো আযাব দিবেন না। 
২/ সন্ধ্যায় তাদের মুখের গন্ধ (যা ক্ষুধার কারণে সৃষ্টি হয়) আল্লাহ্ তাআলার নিকট মেশকের চেয়েও বেশি সুগন্ধিময় হয়।
৩/ ফেরেশতাগণ প্রত্যেক দিনে ও রাতে তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকেন।
৪/ আল্লাহ্ তাআলা জান্নাতকে নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ করেন: “আমার নেক বান্দাদের জন্য সুসজ্জিত হয়ে যাও! শীঘ্রই তারা দুনিয়ার কষ্টের বিনিময়ে আমার ঘর ও দয়ার মধ্যে শান্তি পাবে।”
৫/ যখন রমযান মাসের সর্বশেষ রাত আসে তখন আল্লাহ্ তাআলা সবাইকে ক্ষমা করে দেন।”
উপস্থিতদের মধ্যে একজন দাঁড়িয়ে আরয করলেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ্ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! এটা কি ‘লাইলাতুল ক্বদর?” ইরশাদ করলেন: “না”। তোমরা কি দেখনি, শ্রমিকগণ যখন নিজের কাজ সম্পন্ন করে নেয়, তখন তাদেরকে পারিশ্রমিক দেয়া হয়?” (আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, ২য় খন্ড, ৫৬ পৃষ্ঠা, হাদীস-৭)

রাসুলুল্লাহ ﷺ এর জান্নাতরূপী বাণী
           হযরত সায়্যিদুনা সালমান ফারসী رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ বলেন: রহমতে আলম, নূরে মুজাস্সাম, রাসুলে আকরাম, শাহানশাহে বনী আদম صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم শা’বান মাসের শেষ দিনে ইরশাদ করেছেন: “হে লোকেরা! তোমাদের নিকট মহান ও বরকতময় মাস এসেছে। মাসটি এমন যে, তাতে একটি রাত (এমনি)  রয়েছে, যা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। এ (বরকতময়) মাসের রোযা আল্লাহ্ তাআলা ফরয করেছেন। আর সেটার রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত-বান্দেগী করা ‘তাতাওভু’ (অর্থাৎ সুন্নাত) [এখানে রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করা মানে তারাবীর নামায পড়া বুঝানো হয়েছে ] যে ব্যক্তি এতে নেক কাজ (নফল ইবাদত) করলো, তা হলো ফরয ইবাদতের সমান। আর যে ব্যক্তি ফরয আদায় করেছে, তা হলো সত্তর ফরযের সমান। এ মাস ধৈর্যের। আর ধৈর্যের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত। আর এ মাস হচ্ছে সমবেদনা প্রকাশ ও উপকার সাধনের মাস। এ মাসে মু’মিনদের জীবিকা বাড়িয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি এতে রোযাদারকে ইফতার করায়, তা তার গুনাহ্ সমূহের জন্য (মাগফিরাত)। তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করে দেয়া হবে। আর যে ইফতার করায় সে তেমনি সাওয়াব পাবে যেমন পাবে রোযা পালনকারী, তার রোযা পালনকারীর সাওয়াবে কোনরূপ কমতি হবে না। আমরা আরয করলাম: “ইয়া রাসূলাল্লাহ্ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! আমাদের মধ্যে প্রত্যেকের এমন জিনিস নেই, যা দিয়ে ইফতার করাবে, হুযুর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “আল্লাহ্ তাআলা এ সাওয়াব ওই ব্যক্তিকে দিবেন, যে এক ঢোক দুধ, কিংবা একটা খেজুর অথবা এক ঢোক পানি দ্বারা রোযাদারকে ইফতার করায়। আর যে ব্যক্তি রোযাদারকে পেট ভরে আহার করায়, তাকে আল্লাহ্ তাআলা আমার ‘হাওয’ থেকে পান করাবেন। ফলে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না। শেষ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে। এটা হচ্ছে ওই মাস, যার প্রথমাংশ (অর্থাৎ-প্রথম দশদিন) ‘রহমত’, সেটার মধ্যভাগ (অর্থাৎ মধ্যভাগের দশদিন) ‘মাগফিরাত’ এবং শেষাংশ (অর্থাৎ শেষ দশদিন) ‘জাহান্নাম থেকে মুক্তি (নাজাত)’। যে ব্যক্তি তার কর্মচারীর উপর এ মাসে কাজকর্ম সহজ করে দেয়, আল্লাহ্ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন। জাহান্নাম থেকে মুক্ত করবেন। এ মাসে চারটি কাজ বেশি পরিমাণে কর, সেগুলোর দু‘টি হচ্ছে এমন যে, সে দুটি দ্বারা তোমরা আপন রবকে সন্তুষ্ট করতে পারবে। আর অবশিষ্ট দুটির প্রতি তো তোমরাই মুখাপেক্ষী। সুতরাং যে দু’টি কাজ দ্বারা তোমরা আপন প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করতে পারবে, সে দুটি হচ্ছে- (১) لَا اِلٰہَ اِلَّا اللہُ (আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই) মর্মে সাক্ষ্য দেয়া এবং (২) ক্ষমা প্রার্থনা করা। আর যে দুটি থেকে তোমরা বাঁচতে পারোনা, সেগুলো হচ্ছে: (১) আল্লাহ্ তাআলার মহান দরবারে জান্নাত আশা করা এবং (২) জাহান্নাম থেকে আল্লাহ্ তাআলার আশ্রয় প্রার্থনা করা। (সহীহ ইবনে খুযাইমা, ১৮৮৭ পৃষ্ঠা, ৩য় খন্ড)

জান্নাতকে সাজানো হয়
           হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে ওমর رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُمَا থেকে বর্ণিত: রাহমাতুল্লিল আলামীন, শফিউল মুযনিবীন, রাসুলে আমীন, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “নিশ্চয় জান্নাতকে বছরের শুরু থেকে আগামী বছর পর্যন্ত রমযানুল মোবারকের জন্য সাজানো হয়।” আরো ইরশাদ করেন: “রমযান শরীফের প্রথম দিন জান্নাতের গাছগুলোর নিচে থেকে (সুন্দর চোখ বিশিষ্ট) হুরদের উপর বাতাস প্রবাহিত হয়, আর তারা আরয করে: “হে পরওয়ারদিগার! তোমার বান্দাদের মধ্যে এমনসব বান্দাদেরকে আমাদের স্বামী করিও, যাদেরকে দেখে আমাদের চক্ষুগুলো জুড়ায়। আর তারাও যখন আমাদেরকে দেখে তখন তাদেরও চক্ষু জুড়ায়।” (শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৬৩৩)

প্রতি রাতে ষাট হাজার গুনাহগারের মুক্তি লাভ
           হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ থেকে বর্ণিত: প্রিয় আক্বা, উভয় জাহানের দাতা, রাসুলুল্লাহ্ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “রমযান শরীফের প্রতিটি রাতে আসমানে সুবহে সাদিক পর্যন্ত একজন আহ্বানকারী এ বলে আহ্বান করে, “হে কল্যাণকামী! আল্লাহ্ তাআলার আনুগত্যের দিকে অগ্রসর হও এবং আনন্দিত হয়ে যাও! ওহে অসৎকর্মপরায়ণ! অসৎকর্ম থেকে বিরত হও এবং শিক্ষা গ্রহণ করো। কেউ মাগফিরাত চাওয়ার আছো কি? তার দরখাস্ত পূরণ করা হবে। কেউ তাওবাকারী আছো কি? তার তাওবা কবুল করা হবে। কেউ প্রার্থনাকারী আছো কি? তার দোয়া কবুল করা হবে।কোন দোয়া চাওয়ার কেউ আছো কি? তার প্রার্থনা পূরণ করা হবে। আল্লাহ্ তাআলা রমযানুল মোবারকের প্রতিটি রাতে ইফতারের সময় ষাট হাজার গুনাহগারকে দোযখ থেকে মুক্তি দান করেন। আর ঈদের দিন সমগ্র মাসের সমসংখ্যক গুনাহগারকে ক্ষমা করা হয়।”(দুররে মনসুর, ১ম খন্ড, ১৪৬ পৃষ্ঠা)

প্রতিদিন দশলক্ষ গুনাহগারকে দোযখ থেকে মুক্তিদান
             নবী করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যখন রমযানের প্রথম রাত আসে, তখন আল্লাহ্ তাআলা আপন সৃষ্টির দিকে দয়ার দৃষ্টি দেন। বস্তুতঃ যখন আল্লাহ্ তাআলা কোন বান্দার দিকে দয়ার দৃষ্টি দেন, তাকে কখনো আযাব দিবেন না। আর প্রতিদিন দশলক্ষ (গুনাহগারকে) জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেন। (এভাবে) যখন ঊনত্রিশতম রাত আসে তখন গোটা মাসে যতসংখ্যক লোককে মুক্তিদান করেছেন, তার সমসংখ্যক মানুষকে ওই রাতে মুক্তিদান করেন। অতঃপর যখন ঈদুল ফিতরের রাত আসে তখন ফেরেশতাগণ আনন্দ প্রকাশ করে। আর আল্লাহ্ তাআলা আপন নূরকে বিশেষভাবে বিচ্ছুরিত করেন এবং ফেরেশতাদেরকে বলেন: “হে ফেরেশতার দল! ওই শ্রমিকদের কি প্রতিদান হতে পারে, যে তার দায়িত্ব পালন করেছে? ফেরেশতাগণ আরয করেন: “তাকে পরিপূর্ণ প্রতিদান দেয়া হোক।” আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন: “আমি তোমাদেরকে সাক্ষী করছি-আমি তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিলাম।” (কানযুল উম্মাল, ৮ম খন্ড, ২১৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-২৩৭০২)


জুমার দিনের প্রতিটি মুহুর্তে দশ লক্ষ জাহান্নামীর মাগফিরাত
             হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُمَا থেকে বর্ণিত: খাতামুল মুরসালীন, শফীউল মুযনিবীন, রাহমাতুল্লিল আলামীন  صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “আল্লাহ্ তাআলা মাহে রমযানে প্রতিদিন ইফতারের সময় এমন দশলক্ষ গুনাহগারকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন, যাদের গুনাহের কারণে জাহান্নাম অনিবার্য (ওয়াজিব) হয়েছিলো। অনুরূপভাবে, জুমার রাতে ও জুমার দিনে (অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সূর্যাস্ত থেকে আরম্ভ করে জুমার দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত) প্রতিটি মুহুর্তে এমন দশলক্ষ গুনাহগারকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয়, যারা শাস্তির উপযোগী বলে সাব্যস্ত হয়েছিল।” (কানযুল উম্মাল, ৮ম খন্ড, ২২৩ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-২৩৭১৬)

ব্যয়কে বাড়িয়ে দাও
             হযরত সায়্যিদুনা দ্বামুরা رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ থেকে বর্ণিত: তাজেদারে রিসালাত, শাহানশাহে নবূয়ত, মাহবুবে রব্বুল ইয্যত صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “মাহে রমযানে পরিবারের লোকজনের ব্যয়কে বাড়িয়ে দাও। কেননা, মাহে রমযানে খরচ করা আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় খরচ করার মতোই।” (আল জামেউস সগীর, ১৬২ পৃষ্ঠা, হাদীস-২৭১৬)

বড় বড় চক্ষু বিশিষ্ট হুরেরা
            হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ থেকে বর্ণিত: আল্লাহর প্রিয় হাবীব, হাবিবে লবীব, রাসুলুল্লাহ صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যখন রমযান শরীফের প্রথম তারিখ আসে, তখন মহান আরশের নিচে থেকে মাসীরাহ নামক বাতাস প্রবাহিত হয়, যা জান্নাতের গাছপালাকে নাড়া দেয়। ওই বাতাস প্রবাহিত হওয়ার কারণে এমন মনোরম উচ্চস্বর ধ্বনিত হয়, যার চেয়ে উত্তম সুর আজ পর্যন্ত কেউ শুনেনি। ওই সুর শুনে (সুন্দর চোখ বিশিষ্ট) হুরেরা বেরিয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত তারা জান্নাতের উঁচু উঁচু মহলগুলোর উপর দাঁড়িয়ে যায়। আর বলে, “কেউ আছো, যে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে আমাদের প্রার্থী হবে, যাতে তার সাথে আমাদের বিবাহ হয়?” তারপর ওই হুরগুলো জান্নাতের দারোগা (হযরত) রিদ্বওয়ান عَلٰی نَبِیِّنَا وَعَلَیۡہِ الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام কে জিজ্ঞাসা করে: “আজ এ কেমন রাত?” হযরত রিদ্বওয়ান عَلٰی نَبِیِّنَا وَعَلَیۡہِ الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام তদুত্তরে বলেন: “হ্যাঁ! এটা মাহে রমযানের প্রথম রাত। জান্নাতের দরজাগুলো নবীয়ে রহমত, শফিয়ে উম্মত, তাজেদারে রিসালাত صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উম্মতের রোযাদারের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।” (আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, ২য় খন্ড, ৬০ পৃষ্ঠা, হাদীস-২৩)

রোযা ও কুরআন সুপারিশ করবে
            হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে উমর رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُمَا বলেন: ছরকারে নামদার, মদীনার তাজদার, রহমতের ভান্ডার, রাসুলদের সরদার صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “রোযা ও কুরআন বান্দার জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে।” রোযা আরয করবে: “হে দয়ালু প্রতিপালক! আমি আহার ও প্রবৃত্তিগুলো থেকে দিনে তাকে বিরত রেখেছি। আমার সুপারিশ তার পক্ষে কবুল করো!” কুরআন বলবে: “আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুমাতে দেইনি। আমার সুপারিশ তার পক্ষে কবুল করো।” সুতরাং উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে।” (মুসনদে ইমাম আহমদ, ২য় খন্ড, ৫৮৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৬৬৩৭)

ক্ষমা করার অজুহাত
            আমিরুল মু’মিনীন হযরত মাওলায়ে কায়িনাত আলী মুরতাজা শেরে খোদা رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ বলেন: “যদি আল্লাহ্ তাআলা উম্মতে মুহাম্মদী صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্য থাকতো, তাহলে ‘রমযান’ ও ‘সূরা ইখলাস শরীফ’ কখনো দান করতেন না।” (নুযহাতুল মাজালিস, ১ম খন্ড, ২১৬ পৃষ্ঠা)


লক্ষ রমযানের সাওয়াব
               হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ থেকে বর্ণিত: তাজেদারে রিসালত, শাহানশাহে নবুয়ত, মুস্তফা জানে রহমত صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি মক্কা শরীফে রমযান মাস পেলো, রোযা রাখলো এবং রাতে যথাসম্ভব জেগে জেগে ইবাদত করলো, আল্লাহ্ তাআলা তার জন্য অন্য জায়গার এক লক্ষ রমযান মাসের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন। আর প্রতিদিন একটা গোলাম মুক্ত করার সাওয়াব, প্রতি রাতে একটা গোলাম মুক্ত করার সাওয়াব, প্রতিদিন জিহাদে ঘোড়ার উপর সাওয়ারী দেয়ার সাওয়াব এবং প্রতিটি দিনে ও রাতে সাওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন।” (ইবনে মাজাহ, ৩য় খন্ড, ৫২৩ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩১১৭)

রমযানে যিকিরের ফযীলত
হযরত আমীরুল মু‘মিনীন সায়্যিদুনা উমর ফারুকে আযম رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ থেকে বর্ণিত: ছরকারে নামদার, মদীনার তাজদার, রহমতের ভান্ডার, রাসুলদের সরদার صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর রহমতপূর্ণ বাণী: 
ذَاکِرُ اللہِ فِیۡ رَمَضَانَ یُغۡفَرُلَہُ وَسَائِلُ اللہِ فِیۡہِ لَا یَخِیۡبُ

অনুবাদ:- “রমযান মাসে আল্লাহ্ তাআলার যিকরকারীকে ক্ষমা করা হয় এবং আল্লাহ্ তাআলার দরবারে প্রার্থনাকারী বঞ্চিত থাকে না।”(শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩১১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৩৬২৭)

No comments :

Post a Comment